বি-বাড়িয়ার আবদুল মালেকের দখলে সীতাকুন্ডের ১০০ একর সরকারী পাহাড়, বিক্রি করছে চড়া দামে  

বি-বাড়িয়ার আবদুল মালেকের দখলে সীতাকুন্ডের ১০০ একর সরকারী পাহাড়, বিক্রি করছে চড়া দামে  
বি-বাড়িয়ার আবদুল মালেকের দখলে সীতাকুন্ডের ১০০ একর সরকারী পাহাড়, বিক্রি করছে চড়া দামে  

বিশেষ প্রতিবেদক ।।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ১০ নং সলিমপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সমাদরপাড়া এলাকায় প্রায় একশ’ একর সরকারী পাহাড় দখল করে অবৈধভাবে বিক্রি করছে বি-বাড়িয়া জেলার নাছির নগর থানার গুনিয়াউক গ্রামের জনৈক আবদুল মালেক নামের এক ব্যক্তি।

উক্ত সরকারী জায়গায় অবৈধভাবে বসতঘর নির্মাণ করে বসবাস করছে প্রায় ২০ পরিবার। প্রশাসনিক নজরদারি না থাকায় আবদুল মালেক নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে সরকারি এ পাহাড়ের মাটি কেটে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসতঘর তৈরি অব্যাহত রয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ ঢালে বসতঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে তারা। এতে প্রবল বর্ষণ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাহাড় ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। গত কয়েকদিন আগেও এখানে বসত ঘরের উপর একটি পাহাড় ধসে পড়ে, ভাগ্যক্রমে এতে কোন ধরণের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

সূত্রে জানা যায়, সমাদরপাড়া এলাকায় পাহাড়ের মাটি কেটে বসতঘর নির্মাণ ও বিক্রি অব্যাহত রেখেছে জনৈক আবদুল মালেক। প্রতি ৪ শতক জায়গা ২ থেকে ৩ লাখ টাকায় হতদরিদ্র মানুষের কাছে বিক্রি করছে। সরকারি পাহাড়ের ঢালের মাটি কেটে সমান করে পাকা এবং টিন দিয়ে তৈরি করছে বসতঘর।

ভাটিয়ারী ইউনিয়ন ভুমি অফিস সূত্রে জানা যায়, এখানকার দখল করা জায়গাগুলো খাস জায়গা। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে সরকারী জায়গা দখল করে সেখান বসত বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। গত এক বছরে এই পাহাড়ে অন্তত ১৫টি নতুন বসতঘর তৈরি করেছে। এসব ঘরে বসবাস করছে ২০টি পরিবার। প্রশাসনিক তদারকি না থাকায় জ্যামিতিক হারে অবৈধভাবে পাহাড়ের ওপর ও ঢালে বসতি স্থাপন অব্যাহত রয়েছে।

সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে পাহাড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করতে দেখা গেছে বেশ কয়েকটি পরিবারকে। কথা হয় এখানে বসবাস করা কয়েক জনের সাথে। তারা জানায়, আবদুল মালেক নামের এক ব্যক্তি থেকে তারা পাহাড়ে জায়গা কিনেছেন। দেখা যায় জনৈক আবদুল মালেক নিজেও বিশাল জায়গা নিয়ে নির্মাণ করেছে অট্টোলিকা। যেটাতে তিনি নিজে বসবাস করছেন পাশাপাশি অনেক ভাড়াটিয়াও দিয়েছেন। কয়েকদিন আগে এখানে একটি বালুর পাহাড় ধসে পড়ে কয়েকটি বসত ঘরের ক্ষতি সাধন হয়।

এব্যাপারে ৬নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সাহাদাত হোসেন বলেন, মালেক একজন ভূমিদস্যু, সে দীর্ঘদিন যাবৎ সমাদরপাড়া এলাকায় প্রায় একশত একরের বেশী খাস জায়গা দখল করে তা বিক্রি করছে। এখানে পাহাড় কেটে যে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে তা অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে গত বছরও পাহাড় ধসে গর্ভবতী এক মহিলাসহ ৪ জন নিহত হয়। কয়েকদিন আগেও এখানে পাহাড় ধসে পড়ে ঘরের উপর।

স্থানীয় যুবলীগ নেতা সামশ মোঃ লেনিন বলেন, সরকারী খাস জায়গা দখল করে নিন্ম আয়ের মানুষের কাছে ৩/৪ লাখ টাকা গন্ডা বিক্রি করছে। এখানে প্রশাসনের তেমন নজরদারী না থাকায় পাহাড়ে গড়ে উঠা বসত বাড়িগুলো মাদকের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। এখানে রাতে মাদকসেবীদের আড্ডা বসে। ছোট ছোট শিশু কিশোদের হাতে হাতে থাকে ইয়াবা,গাঁজা।

এদিকে পাহাড় দখল ও ধসে পাড়ার পেয়ে সরজমিনে পরিদর্শনে যান সীতাকুণ্ড উপজেল সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদুল ইসলাম। এসময় তিনি এখানকার বসবাসরতদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

এব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা সরজমিনে গিয়ে দেখলাম সরকারী খাস জায়গা পাহাড় অবৈধ দখল করে অনেক ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোন মূহুর্তে পাহাড় ধসে পড়তে পারে এবং হাতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের মাধ্যমে পরিবারগুলোর তালিকা তৈরী করা হবে। আমরা আপাতত তাদেরকে ১০ দিনের সময় দিয়েছি সরে যাওয়ার। এরপর আইনগতভাবে তাদের উচ্ছেদ করা হবে।

এব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত আবদুল মালেকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।

২৪ ঘণ্টা.নিউজ