ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পারাপারে বাড়ছে দুর্ঘটনা, ফ্লাইওভার স্থাপনের দাবি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পারাপারে বাড়ছে দুর্ঘটনা, ফ্লাইওভার স্থাপনের দাবি
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পারাপারে বাড়ছে দুর্ঘটনা, ফ্লাইওভার স্থাপনের দাবি বারইয়ারহাটে

মাহবুব পলাশ, মীরসরাই ।।

হরহামেশাই দুর্ঘটনা ঘটছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই উপজেলার বারইয়াহাট বাজারে মহাসড়ক পারাপারের সময় । বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে কেউ মৃত্যুবরণ করেন, কেউ পঙ্গু হয়ে যান। আর দিনে দিনে বাড়ছে যানবাহন, বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। সচেতন মহল মনে করছে ফেনীর মতো এখানে ও ফ্লাইওভার স্থাপন করা না হলে কমবে না এমন প্রাণহানি।

সড়কে ডিভাইডার দেয়া হলেও চটজলদি পার হতে গিয়েই মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। আর এ দুর্ঘটনা যেন সাপ্তাহিক সূচিতে দাঁড়িয়েছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) মসজিদ গলির সামনে আনন্দ সুপার বাসের ধাক্কায় প্রাণ যায় মো. সাঈদ (১৯) নামে কলেজ ছাত্রের। গুরুতর আহত হয় সজীব (১৯), তমাল (১৯) ও সোহেল (২০)। একই স্থানে কয়েক মাস পূর্বে জুবায়েদ ( ১৬) নামে এক কিশোর ট্রাক চাপায় নিহত হয়। একই বাজারের পার্শ্ববর্তী গাছ মার্কেট এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্য নুরুল আমিন এক বছর পূর্বে নিহত হন। গেল বছরে এভাবে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু ঘটেছে বারইয়ারহাট বাজার এলাকায়। আবার রেল লাইনেও ঘটছে অসংখ্য দুর্ঘটনা। এছাড়া আরো অনেক মৃত্যুর ঘটনা রয়েছে বারইয়ারহাট পৌরবাজারে। দুর্ঘটনা রোধে কয়েকস্থানে ফুট ওভার ব্রিজ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যবহার করছে না কেউ। তাছাড়া ফুট ওভার ব্রিজ দিয়ে সবাই চলাচল শুরু করলে লাইন ধরতে হবে পারাপারে। এবার বৃহস্পতিবার কলেজ ছাত্র নিহত হবার পর মহাসড়কে শিক্ষার্থীরা অবরোধ করলে স্থানীয় বারইয়ারহাট পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন, স্থানীয় হিঙ্গুলী ইউপি চেয়ারম্যান হারুন ও পৌর আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি রেজাউল করিম খোকন সবাইকে আশ্বস্ত করেন যে, সড়ক মন্ত্রণালয়সহ স্থানীয় সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের কাছে বারইয়ারহাট বাজার এলাকায় মহাসড়কে ফ্লাইওভার স্থাপনের দাবি জানানো হবে। এছাড়া চালকের বিচার নিশ্চিত করা হবে। অবশেষে ছাত্র জনতা ক্ষান্ত হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন এতে করে সমস্যার সমাধান হবে না। এর জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা ও কঠোর পদক্ষেপ। রেজাউল করিম খোকন বলেন, পার্বত্য প্রবেশ দ্বার খাগড়াছড়ি রুট, সোনাগাজী – জোরারগঞ্জ রুট, ছাগলনাইয়া রুট সহ অনেকগুলো জেলার চৌমুহনী এই বারইয়ারহাট। কয়েকটি রুটের বাসস্ট্যান্ডও রয়েছে এখানে। তাই ব্যস্ততম এই বাণিজ্যিক পৌরবাজারে ফেনীর মতো ফ্লাইওভারই একমাত্র জননিরাপত্তা বৃদ্ধির সমাধান।

মহাসড়ক পায়ে হেঁটে পারাপার বন্ধ করা উচিত বলে মনে করেন অনেকেই। কারণ ফোরলেনে যানবাহনের ব্যস্ততা ও গতি এতোটাই যে এখানে দুর্ঘটনা রোধ করা কঠিন অনেকটাই। এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ- ট্রাফিক মোড় থেকে মসজিদ গলি পর্যন্ত উত্তরা, চয়েস, আনন্দ সুপার সহ কিছু স্থানীয় বাস অযথাই মহাসড়ক দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে। এতে দ্রুতগামী বাস ও মালামাল বহনকারী যানের গতির ব্যত্যয় ঘটে বলে দুর্ঘটনা বাড়ছে। উল্লিখিত বাসগুলো স্থানীয় বলে প্রতিটি গাড়ি দীর্ঘক্ষণ রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রী নেয়ায় পারাপারকারী পথচারীরা দিকভ্রান্ত হচ্ছে অনেক সময়। কিন্তু সেখানে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশকে অন্য কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। এই সব বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার ওসি মফিজ উদ্দিন বলেন, আমরা এখন থেকে এ বিষয়গুলোতে কঠোরভাবে হস্তক্ষেপ করবো। আশা করছি শীঘ্রই নিরাপদ পরিস্থিতি ফিরে আসবে।