ডিবি পরিচয়ে টাকা লুট ঘটনায় সীতাকুণ্ডের দুই পুলিশ সদস্য দুই দিনের রিমান্ড

ডিবি পরিচয়ে টাকা লুট ঘটনায় সীতাকুণ্ডের দুই পুলিশ সদস্য দুই দিনের রিমান্ড

নিজস্ব প্রতিবেদন ।।

ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সীতাকুণ্ডে এক ব্যক্তির নগদ ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা, মোবাইল ও মানিব্যাগ লুটের ঘটনায় গ্রেপ্তার সংশ্লিষ্ট থানার উপ পরিদর্শক সাইফুল আলম ও একই থানার কনস্টেবল সাইফুল ইসলামের দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার ৫ম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ২৪ ডিসেম্বর আবু জাফর নামে এক ব্যক্তি সীতাকুণ্ড মডেল থানার উপ পরিদর্শক সাইফুল আলম (৩২), একই থানার কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম (২৭), পুলিশের দুই সোর্স রিপন (৩৫) ও হারুন (৩৩) এবং রাজু (২৫) নামে এক গাড়িচালকের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা করেন। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দের মাধ্যমে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. শাহ আলম।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, গত ২০ ডিসেম্বর গাজীপুর থেকে আবু জাফর একটি পিকআপ গাড়ি ক্রয়ের জন্য সীতাকুণ্ড এলাকায় আসেন। সেখানে তৌহিদুল নামে পূর্বপরিচিত এক ব্যক্তির সাথে পিকআপ গাড়ি নিয়ে দরদাম করেন। এ সময় দামে সন্তুষ্ট না হওয়ায় বাদী গাড়ি না কিনে ঢাকায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৬টায় ঢাকায় ফিরে যাওয়ার জন্য তিনি টিকেট নিয়ে বাস কাউন্টারে অপেক্ষা করতে থাকেন। এসময় দু’জন লোক তার পাশে এসে বসেন এবং তারা কাউন্টারের লোকের সাথে আঞ্চলিক ভাষায় কথাবার্তা বলার পর বাদীর পরিচয় জানতে চান। এসময় তারা বাদীর কাছে কী কাজে এসেছে জানতে চান এবং তাদের একজন বড় ও ছোট স্যারকে ফোন দিতে বলেন। এর ১০/১৫ মিনিট পর সাদা রঙের একটি এঙ করোলা গাড়িতে চালকসহ তিনজন ঘটনাস্থলে আসেন এবং তাদের মধ্যে সাদা পোশাকে দু’জন গাড়ি থেকে নেমে নিজেদের ডিবি পরিচয় দিয়ে আবু জাফরকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যান। এরপর চোখ বেঁধে তার সাথে থাকা নগদ দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, বাদীকে ইয়াবা পাচারকারী সন্দেহে সীতাকুণ্ড জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে শরীর এক্সেরে করেন। সেখানে পরীক্ষা করে কিছু না পেয়ে একই গাড়িতে তুলে শ্যামলী কাউন্টারে নিয়ে আসেন। এ সময় তাকে ‘বাঁচবি না মরবি’ বলে ভয়-ভীতি দেখানো হয়। তখন বাদী বাঁচার আকুতি জানালে তাকে কান্নাকাটি না করার পাশাপাশি চুপচাপ চট্টগ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

পরে বাদী ঢাকায় পৌঁছে আত্মীয় স্বজনের সাথে পরামর্শ করে আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করার পর সীতাকুণ্ড থানায় ডাকাতির মামলা (নং-৫০, তাং- ২৪/১২/২০ইং) করেন। মামলায় দুই পুলিশসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়। এছাড়া বাদী চট্টগ্রাম পুলিশ সুপারকে বিষয়টি অবহিত করলে তদন্তে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।