করোনায় আক্রান্ত চট্টগ্রামে আরও ৩ জন , নগরী ও সীতাকুণ্ডের ৮ বাড়ি ও ৩ দোকান লকডাউন

করোনায় আক্রান্ত  চট্টগ্রামে আরও ৩ জন ,  নগরী ও সীতাকুণ্ডের ৮ বাড়ি ও ৩ দোকান লকডাউন

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

গতকাল চট্টগ্রামে আরও তিনজন করোনাভাইরাসে(কোভিড-১৯) আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে একজন নারী রয়েছেন। হালিশহর, সাগরিকা এবং সীতাকুন্ডে এই তিনজনকে শনাক্তের পর এসব এলাকার ৮টি বাড়ি ও ৩টি দোকান লকডাউন করে দিয়েছে প্রশাসন। রাতে অভিযান চালিয়ে এসব বাড়ি ও দোকান লকডাউন করে দেওয়া হয়।

ফৌজদারহাটের বিশেষায়িত হাসপাতাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকসাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে বুধবার তাদের নমুনা পরীক্ষার পর তা শনাক্ত হয়। এ নিয়ে চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত পাঁচজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। নতুন করে শনাক্ত হওয়া তিনজনের মধ্যে একজন জেলার সীতাকুন্ড উপজেলার বাসিন্দা। বাকিরা নগরীর হালিশহর ও পাশ্ববর্তী সাগরিকা এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য দপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বলেন, “বুধবার ৬০ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন পজিটিভ পাওয়া গেছে। বাকিদের নমুনায় সংক্রমণের অস্তিত নেই। আক্রান্ত হওয়া ওই তিনজনের বয়স ৪০ থেকে ৫০ বছর।”

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (সিটি এসবি) আবদুল ওয়ারিশ জানান, নগরের হালিশহর শাপলা আবাসিক এলাকায় ১টি এবং পাহাড়তলীর সাগরিকা এলাকায় ১টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। তিনি জানান, সিভিল সার্জন অফিস থেকে ঘটনাস্থলে লোক আসছেন। তারা যদি মনে করেন- এসব বাড়ির আশপাশের আরও বাড়ি লকডাউন করা প্রয়োজন, তখন পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।

সীতাকুন্ডের ইউএনও মিল্টন রায় জানান, সীতাকুন্ডে এক ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্তের খবরে পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর বাজার গোডাউন রোড এলাকার ৬টি বাড়ি এবং ৩টি দোকান লকডাউন করা হয়েছে।

এসব বাড়ির কাউকে না বেরুতে এবং দোকান সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

এর আগে গত শুক্রবার ও রবিবার নগরীর দামপাড়া এলাকার বাসিন্দা দুইজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল। দুইজনই সম্পর্কে বাবা-ছেলে। দুইজন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, মঙ্গলবার নমুনা সংগ্রহ করা ৮৯ জনের মধ্যে কারও শরীরের এ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। তবে তাদের মধ্যে প্রথম আক্রান্ত হওয়া বৃদ্ধের পুনরায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতেও ওই ব্যক্তির করোনা পজেটিভ আসে। এখন পর্যন্ত বিআইটিআইডি হাসপাতালে সর্বমোট ৩১১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন আগ থেকে জ্বর -সর্দিসহ করোনার উপসর্গ দেখা যায় নগরীর হালিশর শাপলা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সী ওই নারীর। বিষয়টি স্থানীয়দের মাঝে জানাজানি হলে বিআইটিআইডি হাসপাতালে অবহিত করা হয়। পরে চিকিৎসকদের একটি টিম বাসা থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। এছাড়া সাগরিকা এলাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করা ৪৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি গত ১ মার্চ থেকে করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। পরে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এছাড়া সীতাকুন্ড পৌরসভার গোডাউন রোড এলাকায় বাসিন্দা সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ৫০ বছর বয়সী ওই ব্যাংক কর্মকর্তাও জ্বরে আক্রান্ত হলে তারও নমুনা সংগ্রহ করে বিআইটিআইটি। গতকাল তা পরীক্ষার পর করোনা পজেটিভ আসে।

এদিকে, আক্রান্তদের মধ্যে একজন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানা গেছে। বাকিরা তাদের বাসায় অবস্থান করছেন। তাদেরকেও হাসপাতালে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ।