এনজিওদের কিস্তি করোনার ভয়াবহতা কেটে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বন্ধ রাখার দাবি

এনজিওদের কিস্তি করোনার ভয়াবহতা কেটে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বন্ধ রাখার দাবি
এনজিওদের কিস্তি করোনার ভয়াবহতা কেটে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বন্ধ রাখার দাবি

পোস্টকার্ড ডেস্ক।।

মানুষ যখন করোনাভাইরাস আতঙ্কে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে। খেটে খাওয়া দিনমজুর কাজে যেতে পারছে না। আয় রোজগার বন্ধ হওয়ায় সংসার নির্বাহ করা কষ্ট হয়ে পড়েছে। তখন তাদের তাড়া করে চলেছে এনজিও’র কিস্তি। ক্ষুদ্রঋণের কথা মাথায় নিয়ে দিশেহারা কলাপাড়া উপজেলার মানুষ।

ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে মানুষ এখন দিশেহারা। অবশ্য এ অবস্থা গোটা দেশেই, কাকডাকা ভোরে এনজিও’র আদায়কারী বেরিয়ে পড়ছেন। টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে আর রক্ষা নেই। যেভাবেই হোক কিস্তির টাকা তাদের চাই
উপজেলার অনেকে বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও সমিতির ঋণের কিস্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বা কাজ বন্ধের কথা মনে হলে ঋণের কিস্তি শোধের চিন্তায় কপালে ভাজ পড়ছে সাধারণ মানুষের।
কলাপাড়া সদর এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা যায়, আমাদের নিজেদের কোনো টাকা নেই। সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে দোকান করি। ঘরে থাকতে হলে তো দোকান বন্ধ রাখতে হবে। তখন ঋণের কিস্তি শোধ করবো কীভাবে?

নাচনাপাড়া বঙ্গবন্ধু কলোনী আলেয়া বেগম, মরিয়ম বেগম, কাদের গাজী, সকিনা ,দুলাল সিকদার ,হামিদা বেগম, ফরিদা বেগম, ইটবাড়িয়ার শাজাহান তালুকদার সহ আরো অনেকে কাছ থেকে জানা যায়, , আমাদের তো কাজ করলে পেটে ভাত জোটে, না করলে জেটে না। আমরা কীভাবে ঘরে থাকবো? এর ওপর কমবেশি কিস্তি আছে সবার। সরকারের কাছে অনুরোধ ভাইরাস যতদিন না যায় ততদিন অন্তত আমাদের কিস্তিটা বন্ধ রাখুন। একদিকে করোনার আতঙ্ক, তার ওপর কিস্তির চাপে দিশেহারা হয়ে পড়বো।

ফেরিঘাট এলাকার অনেক চা, পান, বিক্রেতারা জানান রাস্তায় মানুষ খুব কম, তাই দোকানের ভিড়ও কম। বিক্রিও কমে এসেছে। এই দোকানের আয় থেকে আমাদের সংসার চলে। পাশাপাশি দোকান চালানোর জন্য দু -একটি সমিতি থেকে ঋণ নিয়েছি।
তাই এই সংকটের সময়ে ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি উত্তোলন স্থগিত করা হোক। না হয় মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে আরও অতিষ্ঠ হবে প্রান্তিক জনজীবন।

একাধিক মাঠ পর্যায়ের এনজিও কর্মী জানান, ঋণ বিতরণ করার পর উত্তোলন করার দায়িত্ব তাদের। কেউ কিস্তি না দিলে পকেট থেকে অফিসকে দিতে হয়। আমাদেরও চাকরি বাঁচাতে হবে। সরকার কিস্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত দিলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। চাকরি করতে হলে অফিস যা বলবে আমাদেরও তো তাই করতে হবে।

বাংলাদেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিনে দিনে এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। সবশেষ হিসাবে দেশে এখন পর্যন্ত ২৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, আরা মারা গেছেন ২ জন

করোনার বিস্তার রোধে এরই মধ্যে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ ও গণজমায়েতের ওপর। এমনকি মাদারীপুরের শিবচর উপজেলাকে লকডাউনও ঘোষণা করা হয়েছে।

এই একই চিত্র বিরাজ করছে পটুয়াখালী কলাপাড়ার উপজেলায় সর্বত্রে। চড়া সুদে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়েই যেসব এনজিও’র ব্যবসা তাদের কাছে করোনা ভাইরাস কোন ব্যাপার না। তাদের সাফ কথা যেকোন পরিস্থিতিতে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলাপাড়া শহরের একাধিক ঋণ গ্রহিতা জানান, আশা, ব্যাক, পদক্ষেপ, সংকল্প, কোডেক, গ্রামীন ব্যাক , আহসানিয়া মিশনসহন ডজনখানেক এনজিও’র কাছে হাজার হাজার গরীব অসহায় মানুষের হাত-পা বাঁধা পড়েছে।।

এখনি দরকার করোনার ভয়াবহতা কেটে যাওযার আগ পর্যন্ত ক্ষুৃদ্র ঋণ আদায় বন্ধে এনজিও ব্যুরোসহ সরকারের নির্দেশনা।