অগ্নিসন্ত্রাসীদের ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না, যে হাত দিয়ে মারতে আসবে সেই হাত ভেঙে দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

অগ্নিসন্ত্রাসীদের ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না, যে হাত দিয়ে মারতে আসবে সেই হাত ভেঙে দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
অগ্নিসন্ত্রাসীদের ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না, যে হাত দিয়ে মারতে আসবে সেই হাত ভেঙে দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

রাজনৈতিক ডেস্ক ।।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি জিয়াউর রহমানের উর্দি পরা পকেট থেকে বের হয়েছে। আওয়ামী লীগ কারো পকেটের সংগঠন না। মনে রাখা উচিত, আওয়ামী লীগ ভেসে আসেনি। আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন।

এ সময় বিএনপিকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসীদের আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না। বিএনপির মুখে গণতন্ত্র মানায় না। জিয়াউর রহমান কারফিউতন্ত্র দিয়ে গেছে। আর খালেদা দিয়েছে দুর্নীতিতন্ত্র। বিএনপির দুই গুণ দুর্নীতি আর মানুষ খুন।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে সকল সহযোগী সংগঠনের যৌথ সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারপ্রধান বলেন, ক্ষমতা ভোগের বস্তু না। বিএনপি-জামায়াত থাকতে দেশের কোনো উন্নতি হয়নি। উন্নয়ন পোকার মতো খেয়েছে। উন্নয়ন করতে মানসিকতা থাকা দরকার। দিকদর্শন থাকা দরকার।

বিএনপির বিরুদ্ধে আরও কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বারবার আঘাত আমরা সহ্য করব না। আমরা ২০২২ সাল পর্যন্ত সহ্য করেছি। এখন আর করব না। যে হাত দিয়ে আগুন দিতে আসবে, সে হাত দিয়ে তাদের পোড়াতে হবে। ওদের কীসের ক্ষমা। বসে বসে আর মার খাওয়া যাবে না।

দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সবাই প্রস্তুত থাকুন। মেহনতী মানুষের ওপর আঘাত করলে তাদের ক্ষমা নেই।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করেছিল। আমরা সেসবের প্রতিশোধ নেইনি। এখানে নাছিম আছে, সাবের হোসেন চৌধুরীর ওপর যে অত্যাচার করা হয়, বিএনপি তো মনে করেছিল তারা মারা গেছে। বিএনপি আমাদের প্রতিটি নেতা-কর্মীর ওপর নির্যাতন করেছে। ২০০১ সালের মধ্যে নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়ি দখল করে পুকুর কেটে কলা গাছ লাগানো হয়েছিল। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমরা প্রতিশোধ নিতে পারতাম কিন্তু আমরা তা করিনি।’

তিনি বলেন, ‘চাল-ডাল দিয়ে খিচুড়ি খেয়ে সরকার হটানো যাবে না। যে হাত দিয়ে মারতে আসবে, সেই হাত ভেঙে দিতে হবে।’

‘তারা সরকারকে উৎখাত করতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এ সরকার জনগণের সেবক। খিচুড়ি খাইয়ে সরকারের পতন ঘটানো সহজ নয়’, বলেন শেখ হাসিনা।

যৌথ সভায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেনসহ সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুই মেয়র উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের শুরুতে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, দেশে আগুন সন্ত্রাস শুরু করে দিয়েছে বিএনপি। দেশের মানুষ আতঙ্কে আছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে তারা মাঠে নামিয়েছে জঙ্গিদের। লাশ ফেলার দুরভিসন্ধি তারা গতকাল কার্যকর করেছে। তারা হামলা করেছে পুলিশের ওপর।

এ সময় মিডিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, পুলিশ রাস্তায় পড়ে ছিল, সেই ছবি মিডিয়া দেখায়নি। তারা বিআরটিসি বাস পুড়িয়েছে। সরকারি গাড়ি পুড়িয়ে ফেলবে, সেই ছবি দেখাবে না। এই দুর্ব্যবহার কেন করা হচ্ছে? মিডিয়ার একটি অংশ কেন একটি পক্ষ নিচ্ছে? এটা আমার অভিযোগ। কক্সবাজারে এত বড় সমাবেশ, মিডিয়া ঠিকভাবে দেখায়নি। ‌মিডিয়ার কাছে আমরা প্রত্যাশা করি, তারা যা দেখবে তাই দেখাবে। আমরা সত্যকে তুলে ধরার আহ্বান জানাই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, লন্ডন থেকে ফরমায়েশ আসে। মির্জা ফখরুল চাকরি রক্ষার জন্য তা করে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সব বিভাগ, জেলা, উপজেলা, থানা, ওয়ার্ডে সতর্ক অবস্থায় থাকবে। ষড়যন্ত্রের চোরাগলি দিয়ে বিএনপি সরকার হটানোর চেষ্টা করছে। সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে আমরা দেশকে তুলে দিতে পারি না। এটা আমাদের শপথ। আক্রমণ আমরা করব না। তবে আক্রান্ত হলে সমুচিত জবাব দেয়া হবে। আমরা সরকারি দল, মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। আমাদের যেন কোনো বদনাম না হয় আক্রমণকারী হিসেবে।

এ সময় রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ আমরা করতে দেব না। আগামীকাল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সমাবেশও মহানগর নাট্যমঞ্চে হবে। জনগণের ভোগান্তি হতে দেয়া যাবে না।

সভায় কূটনীতিকদেরও সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, আমাদের বিদেশি বন্ধুরা একতরফা কথা বলবে, এটা কূটনৈতিক শিষ্টাচার নয়।

বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, খেলা দেখতে কারেন্ট সমস্যা, এমন অভিযোগ নেই। বিশ্ব সংকটময় পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা শক্তভাবে সামাল দিচ্ছেন। 

খালেদ / পোস্টকার্ড ;