পরিবেশ নিয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন করলে পূর্ণাঙ্গ সহায়তা দেয়া হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

পরিবেশ নিয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন করলে পূর্ণাঙ্গ সহায়তা দেয়া হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
পরিবেশ নিয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন করলে পূর্ণাঙ্গ সহায়তা দেয়া হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

পোস্টকার্ড ডেস্ক।।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত পরিবেশ সাংবাদিকদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস-২০২৪ উপলক্ষে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি আশ্বাস দেন। 

তিনি বলেছেন, যারা সঠিক তথ্য দিয়ে পরিবেশ নিয়ে প্রতিবেদন করবেন, তাঁদের পূর্ণ সহায়তা দেওয়া হবে।

শনিবার (৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত ‘গ্রহের জন্য গণমাধ্যম: পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায় সাংবাদিকতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘আমরা মনে করতে চাই, পরিবেশ বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে যারা নেতিবাচকভাবে অবদান রাখবে, যেসব সাংবাদিক তাদের তথ্য প্রকাশ (এক্সপোজ) করবেন, সেসব সাংবাদিক আমাদের বন্ধু। বন্ধু হিসেবে তাদের পূর্ণাঙ্গ সহায়তা দিতে চাই।’

তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরিবেশ সুরক্ষা সরকারের কেন্দ্রীয় নীতির অংশ। তৃণমূলে যতই কঠিন বাস্তবতা তৈরি করা হোক না কেন, তাঁদের সুরক্ষা এবং যত ধরনের সহযোগিতা লাগে, তা দেওয়া হবে।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘সারা দেশে গণমাধ্যমের মধ্যে শৃঙ্খলা আনা দরকার। আপনারাও (সাংবাদিক) বলেন, সাংবাদিকদের ন্যূনতম যোগ্যতার প্রয়োজন রয়েছে। সাংবাদিকসহ সব স্তরে সবার দাবি যেহেতু একই রকম, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে এ দাবিগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করে সে জায়গায় কাজ করব।’

তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, অপসাংবাদিকতার চর্চা মূল সাংবাদিকতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। স্টাবলিশ গণমাধমগুলোর অনলাইনের লিস্ট, অনলাইন পোর্টালগুলোর লিস্ট আমি চেয়েছি। এর বাইরে আরও অনেক নিবন্ধনহীন আছে। সবার দাবি, এগুলো বন্ধ করা। এপ্লিকেশন করা থাকলে চালু থাকবে। না হলে বন্ধ। সাংবাদিকদের দাবির প্রেক্ষতে এসব পদক্ষেপ নিচ্ছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে গণমাধ্যম মুক্ত নয়, উন্মুক্ত হয়ে আছে। গণমাধ্যমকর্মীরা আমাদের বন্ধু। সব সমালোচনাকে স্বাগত জানাই। উদ্দেশ্যমূলকভাবে ক্যাম্পেইনের বিরুদ্ধে নিন্দা জানাই।

‘আমরা মনে করি না সরকার যারা পরিচালনা করছে তারা সবাই ফেরেশতা। গণমাধ্যম ধরিয়ে দিলে আমরা শুধরে নিতে পারি। তবে অনেক ক্ষেত্রই মোটিভেটেড সাংবাদিকতা হয়। ক্ষতি হয় পেশাদার সাংবাদিকতার’, যোগ করেন তিনি।

তিনি উল্লেখ করেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (ডিএসএ) মামলা করে দিলেই জেলে নেয়া হতো। এখন সেটি নেই। সিএসএতে অপসাংবাদিকয়ায় কেউ যদি ভুক্তভোগী হয়, তারও সহায়তা চাওয়ার অধিকার আছে। পেশাদার সাংবাদিকতার সুরক্ষা দেয়ার জন্য আইন করা হয়েছে। অপব্যবহার হলে তার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান থাকবে।

তিনি আরও বলেন, রাইট টু ইনফরমেশন এক্ট প্রয়োজনীয়। কিভাবে আরও এফেক্টিভলি ইউজ করতে পারি সে ব্যাপারে কাজ চলছে। গণমাধ্যম জনগণের পক্ষে কোনো তথ্য চাইলে তা দেয়ার বাধ্যবাধকা থাকবে। এ ব্যাপারে ট্রেইনিংয়ের আয়োজন করা হবে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) রহিত হওয়ার পরও এই আইনে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের কারাভোগ করা সামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে না বলে মনে করেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম।

তথ্য প্রতিমন্ত্রীর উদ্দেশে মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, ডিএসএ উঠে গেছে। কিন্তু ডিএসএর মামলায় ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা এখনো কারাগারে। একটি আইন মনে করা হলো প্রয়োজন নেই, চলে গেল। কিন্তু সেই আইনে ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জেল খাটছেন, এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে না।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে করা সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আরও বিস্তারিত আলোচনা করতে চান বলে জানান মাহ্‌ফুজ আনাম। তিনি বলেন, এখনো কিছু ভীতিকর বিষয় আছে। এ ছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন চলে গেলেও আরও ৯টি আইন রয়ে গেছে, যেগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।

সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (নোয়াব) সভাপতি এ কে আজাদ, ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান, দেশ রূপান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুন। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকেরা।

আলোচনা সভায় প্রতিপাদ্যের ওপর সূচনা বক্তব্য দেন দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান প্রতিবেদক পিনাকী রায়।

খালেদ/ পোস্টকার্ড ;