পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে বান্দরবানে পর্যটকের ভিড়

পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে বান্দরবানে পর্যটকের ভিড়
পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে বান্দরবানে পর্যটকের ভিড়

কিকিউ মার্মা, বান্দরবান ।।

বান্দরবান সবুজ পাহাড় আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেঘেরা । শীতের শুরুতেই পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসেন পাহাড়িকন্যা বান্দরবানে। প্রতিবছর শীত মৌসুমে পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রচুর পর্যটকের ঢল নামে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে। এ বছর শীতের শুরুতেই পর্যটন স্পটগুলোতে জমজমাট হয়ে উঠেছে পর্যটকের ভিড়ে।

নীলাচল ও নীলগিরির মেঘ যেন পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকরা শহরের কোলাহল থেকে স্বস্তির সন্ধানে ছুটে আসেন বান্দরবানে। তারা মুগ্ধ হয়ে ঘুরে বেড়ান বান্দরবানের মেঘলা, নীলাচল, চিম্বুক, নীল দিগন্ত, স্বর্ণমন্দির, রামজাদি, সাঙ্গু নদী, শৈলপ্রপাত ও নীলগিরিতে। এমনকি একটু বেশি সময় নিয়ে যারা ঘুরতে আসেন তারা ছুটে যান থানচির রেমাক্রি, বড়পাথর, নাফাখুম ঝরনা ও আমিয়া কুম দেখতে।

কয়েক মাস আগের বন্যা, ডেঙ্গু ও সাম্প্রতিক রক্তক্ষয়ী হানাহানির কারণে বান্দরবানে পর্যটকের আনাগোনা অনেকটা কম ছিল। তবে সবকিছুর রেশ কাটিয়ে শীত যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে বান্দরবানের পর্যটনশিল্পের জন্য। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে মুগ্ধ হয়ে ঘুরে বেড়ান এদিক-ওদিক। কেউ এসেছেন সপরিবারে আবার কেউবা এসেছেন বন্ধুবান্ধব নিয়ে। পাহাড়ের চূড়ায় মেঘের ভেলা ভেসে যাওয়ার দৃশ্য অনেকে বন্দি করেন তার মোবাইল ফোনে। কেউ মেঘলার লেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছোট ছোট রাইডে চড়ে উপভোগ করেন প্রকৃতির শোভা। আবার কেউ ঝুলন্ত সেতুতে হেঁটে প্রকৃতির শোভা দেখতে দেখতে মুগ্ধ হন। আবার কেউবা বসে বসে সময় কাটান।

ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মোহাম্মদ সেলিম, আবদুর রহিম ও জাফর আহমেদ জানান, আমাদের দেশের ভেতরে যে এত সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে সেগুলো আমরা কখনও দেখিনি। দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। এখানের নীলগিরি, নীলাচল আর শৈলপ্রপাত অনেক সুন্দর। তারা আরও জানান, এখানে পরিবেশ বড়ই মনোমুগ্ধকর। রাস্তাগুলো অনেক চমৎকার। পাহাড়ের ওপর থেকে নিচে তাকালে দেখা যায় পাহাড় আর মেঘের লুকোচুরি খেলা। তাছাড়া পাহাড়ে রাস্তার দু’পাশের ছোট কুটিরগুলো অনেক সুন্দর।

বগুড়া থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেড়াতে আসা পর্যটক মোহাম্মদ সলিমউল্লাহ জানান, ছয়-সাত বছর আগে এখানে এসেছিলাম, তখন তেমন ভালো লাগেনি। তবে এবার অনেক পরিবর্তন এসেছে, অনেক সুন্দর। পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে অনেক কাজ করা হয়েছে।

আবাসিক হোটেল মালিক সমিতি বান্দরবান জেলার সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, এই শীত মৌসুমের শুরুতেই বান্দরবানে পর্যটকদের আনাগোনা বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে পর্যটনশিল্প। চাঙ্গা হয়ে উঠছে পর্যটনশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা-বাণিজ্যও। তিনি বলেন, পর্যটনশিল্পের বিকাশে বান্দরবানে আবাসিক হোটেলগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রেস্টুরেন্ট, পাশাপাশি পাহাড়িদের তৈরি হস্তশিল্প শোপিস ও তাঁতের কাপড়ের দোকানসহ পর্যটনশিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও।

অন্যদিকে বান্দরবান ট্যুরিস্ট পুলিশের উপপরিদর্শক সুহৃদ চাকমা জানান, পর্যটক যারা এসেছেন বা আসবেন ওনারা যাতে নিরাপদে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভ্রমণ করতে পারেন সেজন্য আমাদের সর্বাপেক্ষা প্রচেষ্টা চলছে। নিরাপত্তার বিষয়ে কারও কোনো সমস্যা হবে না।