পতেঙ্গা সৈকত যাচ্ছে বেসরকারি খাতে

পতেঙ্গা সৈকত যাচ্ছে বেসরকারি খাতে

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ২৫ বছরর দীর্ঘ সময়ের জন্য বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাচ্ছে । এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ১০ কিলোমিটার সৈকত এলাকাকে দুইটি জোনে ভাগ করে দায়িত্ব দেয়া হবে দু’টি অপারেটর প্রতিষ্ঠানকে। চুক্তি অনুযায়ী এ প্রকল্পে অন্তত দেড় হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। সৈকতে সি ক্রুজের মতো ওয়াটার রাইডের পাশাপাশি থাকবে ক্যাবল কার এবং টয় ট্রেন। ওয়াটার ক্রুজে যাওয়ার জন্য থাকবে দর্শনীয় দু’টি জেটি। একাধিক থিম পার্কের ব্যবস্থাও থাকবে পতেঙ্গা সৈকতে। খুব শীঘ্রই টেন্ডার আহবান করা হবে। সিডিএ কর্তৃপক্ষ মনে করছে এতে আয় বাড়বে, সৈকত ব্যবস্থাপনা শৃংখলায় ফিরবে।

সিডিএ সূত্র জানায়, আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় শেষ হতে যাওয়া আউটার রিং রোডের বিশাল একটি অংশ জুড়ে রয়েছে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের অবস্থান। এর মধ্যে সড়কের অংশ হিসাবে পতেঙ্গায় তিন স্তরের একটি পর্যটন স্পটও তৈরি হয়ে গেছে। যার আকর্ষণে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসে এখানে। কিন্তু সিডিএর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সৈকতের সৌন্দর্য ধরে রাখা সম্ভব না হওয়ায় পুরো দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে বেসরকারি খাতে।


এ প্রসঙ্গে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, একটা প্ল্যান ডিজাইন করা হয়েছে। ওই ডিজাইন অনুযায়ী কাজগুলো অপারেটররা বাস্তবায়ন করবে। দুই জোনে ভাগ করে কাজ হবে। দুই জোনেই হবে ওয়াটার রিলেটেড স্ট্রাকচার, থিম পার্ক, হোটেল থাকবে।তিনি বলেন, নৌ বাহিনীর ওয়েস্ট পয়েন্টের পার্শ্ববর্তী অংশ থেকে সাড়ে ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রথম জোন এবং সেখান থেকে ইপিজেডের পেছনের অংশ হবে দ্বিতীয় জোন। প্রথম জোন থেকে দ্বিতীয় জোনে যাওয়ার পথে দর্শনার্থীদের জন্য থাকবে টয় ট্রেন এবং ক্যাবল কার। ওয়াটার ক্রুজে যাওয়ার জন্য থাকবে দর্শনীয় দু’টি জেটি। একাধিক থিম পার্কের ব্যবস্থাও থাকবে এখানে।

প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ হাজার দর্শনার্থীর ভিড় জমে এই সৈকতে। আর বন্ধের দিন কিংবা যে কোনো উৎসবে তা লাখ ছাড়িয়ে যায়। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় দর্শনার্থীর বেশিরভাগই সাধারণ পর্যটক। তবে প্রকৃতির এই নৈসর্গিক সৈকত বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপনায় কতটা সুরক্ষিত থাকবে, কোন ধরনের আবদ্ধতা সৃষ্টি হবে কিনা সে প্রশ্নও তুলেছেন পরিবেশ আন্দোলন কর্মীরা।

চট্টগ্রাম পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. এবিএম আবু নোমান বলেন, যদি এটি প্রাইভেট খাতে ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে বেশি মুনাফার জন্য তারা সেখানে স্থাপনা তৈরি করবে। এতে বদ্ধ বা আবদ্ধ বিষয়ের মতো হয়ে যাবে তাহলে জনগণের বিনোদনের যে অধিকার সেটি বিনষ্ট হবে।

সিডিএর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের উপ প্রকল্প পরিচালক রাজীব দাশ বলেন, সিডিএর এতো জনবল নেই। এ কারণে এটা দেখবাল করা যাচ্ছে না। আমরা চাচ্ছি, একটা বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়ার।

সিডিএ’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাসেই টেন্ডার আহ্বানের পাশাপাশি আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ হবে পুরো প্রকল্পের কাজ। দু’টি প্রতিষ্ঠানের সাথে সৈকত ব্যবস্থাপনায় সিডিএ’র চুক্তি হবে ২৫ বছরের।