দেশের পাটকলগুলোর আধুনিকায়নের কর্মপন্থা দ্রুত প্রস্তুতের নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী

দেশের পাটকলগুলোর আধুনিকায়নের কর্মপন্থা দ্রুত প্রস্তুতের নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

দেশের পাটকলগুলোর ধারাবাহিক লোকসানের জন্য শ্রমিক ভাইয়েরা দায়ী না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বর্তমান এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতার জন্য পাটকলগুলোর সংস্কার ও আধুনিকায়নের কর্মপন্থা প্রস্তুত করে অতি দ্রুত তার কাছে নিয়ে আসার জন্যও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।

শুক্রবার (৩ জুলাই) রাজধানীর পাটমন্ত্রীর বাসভবনে পাটকল নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার কথা জানান।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার (০২ জুলাই) সকালে গণভবনে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে শ্রমিকদের ২০১৫ সালের জাতীয় মজুরি কাঠামো অনুযায়ী তাদের সম্পূর্ণ পাওনা প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা রকার পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পাটমন্ত্রী বলেন, তিনি বলেন, এক বছর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমরা যেহেতু লসের ভার বইতে পারছিলাম না, দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে হবে, তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল এগুলোকে কীভাবে আরও উন্নত মানের করা যায়। পুরনো টেকনোলজি দিয়ে আমাদের এই কারখানাগুলো টিকতে পারছে না। মাসের পর মাস লস করছে।

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ধারবাহিক এই লোকসানের জন্যআমাদের শ্রমিক ভাইয়েরা দায়ী না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই শ্রমিক ভাইয়েরা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আন্দোলন করেছেন। এক লাখ শ্রমিক বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আন্দোলন করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। শ্রমিকদের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী চোখের পানি ফেলেছেন। বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিল এরা, এদের তো পুনর্বাসন করতে হবে, এদেরকে আরও ট্রেনিং দেয়া যায় কি-না। প্রধানমন্ত্রী অর্থসচিবকে বলেছেন এদেরকে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করো, তাদেরকে আমার দরকার, তাদেরকে হারাতে চাই না।

সংবাদ সম্মেলনে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান বলেন, আমাদের চেয়ে শ্রমিকের প্রতি বেদনা প্রধানমন্ত্রীর বেশি। পাটকল বন্ধ নিয়ে যখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলি, তখন পাটকল বন্ধের ঘোষণা আর শ্রমিকের কথা শুনে মনে হলো সেদিন প্রধানমন্ত্রী কাঁদছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি শ্রমিকের পাওনা একসঙ্গে দেয়ার সিদ্ধান্ত, শ্রমিকের টাকা কেউ যাতে মেরে খেতে না পারে সে ব্যবস্থা করেন।

তিনি বলেন, পাটকল বন্ধ ঘোষণা করা মানে এগুলোকে শেষ করে দেয়া নয়। সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) আওতায় নতুন করে যাত্রা শুরু করবে পাটকল। এতে লোকসান হবে না, এর মাধ্যমে উৎপাদন বাড়বে, অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে। পাটকল বন্ধ হওয়া মানে আমার দৃষ্টিতে শ্রমিকরা কর্মহীন হচ্ছে না, তবে ভালো জায়গায় যেতে হলে কিছু বেদনা থাকবে। তবে আমার দাবি থাকবে যাতে টাকাগুলো শ্রমিকরা এককালীন পান।