কোনো সাংসদকে নিজ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলা কি সমীচীন : তথ্যমন্ত্রী

কোনো সাংসদকে নিজ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলা কি সমীচীন : তথ্যমন্ত্রী
কোনো সাংসদকে নিজ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলা কি সমীচীন : তথ্যমন্ত্রী

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

নিজ নির্বাচনী এলাকা ছেড়ে কোনো সংসদ সদস্যকে চলে যেতে বলা তার মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

মন্ত্রী বলেন, তিনি যাতে কোনো নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা বা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ না করেন, সেটির নির্দেশনা অবশ্যই থাকবে, থাকা বাঞ্ছনীয়। এবং সেটি করলে অন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হতে পারে, কিন্তু যিনি ওখানে ভোটার ওই এলাকার সংসদ সদস্য তাকে নিজের ভিটে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলা কি সমীচীন হয়েছে, সেটিই হচ্ছে প্রশ্ন?

মঙ্গলবার (১৪ জুন) দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত বিশ্ব রক্তদাতা দিবস উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমত আমার প্রশ্ন হচ্ছে যিনি ওই এলাকার সংসদ সদস্য, ওই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা যিনি ওই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ভোটার, তাকে নির্বাচন কমিশন এলাকা ছাড়ার কথা বলতে পারে কি না। এটি কি তার মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ নয়? তাহলে তো ঢাকা শহরে যখন সিটি করপোরেশন নির্বাচন হবে তখন ঢাকা থেকে নির্বাচিত সব সংসদ সদস্য, মন্ত্রীদেরকেও ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে। এভাবে তাকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে তার মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে বলে আমি মনে করি।

মন্ত্রী বলেন, এলাকা ছেড়ে যেতে হবে এটি দুনিয়ার কোথাও নেই। সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না-এটি ভারতে নেই, পাকিস্তানে নেই, ইংল্যান্ডে নেই, কন্টিনেন্টাল ইউরোপে নেই, অস্ট্রেলিয়া, জাপানে নেই, কোথাও নেই। সেই আইনটাও কিন্তু বৈষম্যমূলক।

হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে অনেক কাগজে দেখলাম এটি নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। এখানে নির্বাচন কমিশন কি ভুল করেছে আগে সেটি আলোচনা হওয়া প্রয়োজন রয়েছে। এলাকা ছাড়ার নির্দেশনা কখনো কোথাও দেয়া হয়নি। আমার বাড়ি চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় আমি মন্ত্রী এবং আমি চট্টগ্রাম শহরে ছিলাম, কোনো নির্বাচনী প্রচারণায় আমি অংশগ্রহণ করিনি, বাড়ি থেকে দু’ একবার বের হয়েছি প্রটোকল ছাড়া।

এর আগে বিশ্ব রক্তদাতা দিবস উপলক্ষ্যে দেয়া বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান রক্তদান ও জনহিতকর কর্মসূচির জন্য কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৭২ সালের ১০ জুন দেশে প্রথম স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত চিকিৎসক পরে জাতীয় অধ্যাপক প্রয়াত ডা. নূরুল ইসলাম নিজে রক্ত দিয়ে কর্মসূচি শুরু করেন।

আমরা শুধু অবকাঠামোগত দিক দিয়ে বা বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমেই উন্নত রাষ্ট্র নয়, বাংলাদেশকে আমরা একটি মানবিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে চাই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার লক্ষ্য হচ্ছে একটি উন্নত রাষ্ট্র গঠনের পাশাপাশি একটি সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র, একটি মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। আর মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে মানবিকতার বিকাশ প্রয়োজন। যারা মানবিকতা প্রদর্শন করে, মানবিক কাজ করে তাদের প্রশংসা করা উচিত।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ডা. নিজামউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোটিভেশন এম. রেজাউল হাসান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। রক্তদানে বিশেষ অবদানের জন্য সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম দিলালকে প্লাটিনাম পদকসহ রক্তদাতাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;